নিজস্ব সংবাদদাতা কাত্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়
বর্ধমান বিখ্যাত সীতাভোগ-মিহিদানার জন্যে এরসঙ্গে খ্যাতি লাভ করেছে শক্তিগরের ল্যাংচাও। এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে আউশগ্রামের বড়া চৌমাথার মন্ডা। এনএইচ ২ বি-এর উপর আউশগ্রামের বড়া চৌমাথা। এখানকার মন্ডার খ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আর তাই, বর্ধমান সিউড়ি ২বি জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি থামিয়ে একবার মন্ডা খেতে অনায়াসে নেমে পড়েন বড়া চৌমাথায়।

কলকাতা থেকে তারাপীঠ অথবা বোলপুর শান্তিনিকেতন যাওয়া বা উত্তরবঙ্গ যাওয়ার জন্য অন্যতম রাস্তা এনএইচ ২ বি। এই জায়গা গুলিতে থেমে তারপর চা, সিঙাড়া খাওয়ার পাশাপাশি বড়ার মন্ডা কিনতে ভুলবেন না । মুখে দিলেই সন্দেশের মতো মিলিয়ে যায় এই মন্ডা। ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত দামের মন্ডা রয়েছে বড়া চৌমাথায়।

কারও মতে, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা গ্রামের ময়রা গোপালচন্দ্র পাল স্বপ্নে ওই মিষ্টি আবিষ্কার করেন। আবার কারও দাবি, মন্ডার আবির্ভাব হয় বাঁকুড়ায়। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “সেই ছেলেবেলায় বাবার হাত ধরে মুক্তাগাছার জমিদার বাড়িতে গিয়ে মন্ডা খেয়েছিলাম। অন্য রকমের মিষ্টি। খেতে খুব ভাল। সেই স্বাদ আজও আবছা মনে আছে। তারপরে আর মন্ডা খাইনি। তবে, মন্ডা অন্য কোনও নামে বা আকৃতিতে হয়তো বাংলায় বেঁচে রয়েছে।”

কীভাবে তৈরি হয় সেই মিষ্টি? জানা যাচ্ছে যে, ছানার সঙ্গে খুব অল্প পরিমাণে চিনি দিয়ে এই সুস্বাদু মন্ডা তৈরি করেন এখানকার কারিগররা। ফলে এর স্বাদও হয় অসাধারণ। তবে কারিগরদের মতে, মন্ডার দুর্দান্ত এই স্বাদ পুরোটাই নির্ভর করছে এর পাকের উপর। তাঁদের মতে, ঠিক মতো পাক দিতে না পারলে কমে যায় মন্ডার মান। তাই সেইদিকে তীক্ষ্ণ নজর থাকে ময়রার। কোনও কারণেই মন্ডার মান কমাতে রাজি নন তাঁরা। আর গত বেশ কয়েক বছর ধরে সেই কাজে সিদ্ধহস্ত বড়ার মন্ডার কারিগররা। ফলে মন্ডার লোভ কিছুতেই ছাড়তে পারেন না। স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর দুরান্ত থেকে আসা সাধারণ মানুষের পছন্দের মিষ্টি এই মন্ডা। দোকানে বসে খাওয়া ছাড়াও বাড়ির জন্যও তাঁরা নিয়ে যান বড়া চৌমাথার এই স্পেশাল মন্ডা।
