মনিপুষ্পক খাঁ : – শুরু হয়েছে ৪৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন লেখক, বুদ্ধিজীবী ভিড় করছেন বই মেলায়। কিন্তু ভারতে থেকেও কলকাতায় প্রবেশ নিষেধ তসলিমা নাসরিনের। এই নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি। তিনি তাঁর ফেসবুকে লেখে, ” কলকাতায় আন্তর্জাতিক বইমেলা হচ্ছে, যে বইমেলায় আমি একসময় ভালোবেসে যেতাম। বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যেতাম বইমেলায় যাওয়ার জন্য। ইউরোপ আমেরিকা থেকে ছুটে আসতাম ভারতে, শুধু কলকাতা বইমেলার জন্য। আর এখন, আমি ভারতে থেকে ওয়ার্ল্ড বুক ফেয়ারে যাচ্ছি, কেরালা বইমেলা, পুণে বইমেলা, চেন্নাই বইমেলা, রায়পুর বইমেলা, ভুপাল বইমেলা, ভুবনেশ্বর বই মেলা, ইত্যাদি নানা রাজ্যের বইমেলায় যাচ্ছি। কিন্তু যেতে পারছি না শুধু কলকাতা বইমেলায়। এক সময় কলকাতা বইমেলায় ঢুকলে এত মানুষ আমার অটোগ্রাফ নিতে আসতো যে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হতো, আমার বই কিনতে আসার জন্য ভিড় এত বেশি হতো যে স্টলের কোলাবসিবল গেট বন্ধ করে দিতে হতো। এসব নাকি কলকাতার কিছু বড় লেখকের পছন্দ হয়নি।” কিন্তু কেন তিনি আসতে পারবেন না? কে তাঁকে আসতে নিষেধ করেছে?

আসলে কলকাতায় বা বাংলায় তসলিমার আসার উপর নিষেধজ্ঞা জারি হয়েছে অনেক আগেই। সেই ধারাই সমানে চলেছে। আমাদের প্রশ্ন, সময় পাল্টেছে। পরিবেশের পরিবর্তন হয়েছে। তাহলে কেন এখনও সেই নিষেধজ্ঞা থাকবে। কেন মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে তাঁকে আসার অনুমতি দেবেন না। তসলিমা নিজেই লিখেছেন,আমাকে যে কলকাতায় ঢুকতে দেবেন না মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, এ নিয়ে কলকাতার কোনও লেখক কবির কিছু কি যায় আসে? না। বাংলাদেশের একুশে বইমেলায় যে ঢুকতে পারব না, ঢুকতে পারছি না বত্রিশ বছর। এতে সেখানকার লেখক কবির কিছু কি যায় আসে? না, যায় আসে না। বাংলাদেশ তো কতকাল আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ও দেশের লেখক কবিরাও অনেককাল নষ্ট। ওদের কথা ধরছি না। এত নষ্টদের মধ্যে এই যে আমি শুদ্ধ মন নিয়ে বেঁচে আছি, এত হিংসুক আর লোভীদের মধ্যে আমি যে আজও উদার এবং নির্লোভ জীবন যাপন করছি, আমাকে আমারই তো ভালবাসা উচিত! কিন্তু ওটিই আর করছি কই?’ আমরা চাই কলকাতার দরজা সকলের জন্যই খোলা থাকুক। ভারতের সংস্কৃতির রাজধানী কলকাতা। সেকথা যেন আমরা ভুলে না যাই!!