মনিপুষ্পক খাঁ : – সিরিয়াসি গত ৫০ বছর ধরেই শাসন করে আসছে আসাদ পরিবার। স্বাভাবিক কারণেই ক্ষোভ ছিল মানুষের মনে। কারণ সেখানে গণতন্ত্রের বিকাশ ঘটছিল না। কিন্তু আসাদের বিদায়ের পড়ে সেখানে প্রতিষ্ঠা পেলো আল কায়দা গোষ্ঠী। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে এবার প্রাক্তন আল কায়দা জঙ্গি! যুদ্ধজর্জর দেশটির রাশ ধরল কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী তথা যুদ্ধপতি আবু মহম্মদ আল জোলানি। ফলে, বাশার আল আসাদের পতনে ‘সিরীয় বসন্ত’ বা গণতন্ত্রের নবোদয়ের স্বপ্ন আপাতত খানখান বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। প্রশ্নের মুখে দেশটির সংখ্যালঘুদের ভবিষ্যৎও। ওই দেশে আবার সংগঠিত হতে চলেছে বিভিন্ন জেহাদি গোষ্ঠী – যারা পৃথিবীর ত্রাস হয়ে উঠতে পারে।

২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন বাশার আল আসাদ। কিন্তু জলঘোলা হতে শুরু করে ২০১১ সালে। আরব বসন্তের হাওয়ায় উত্তাল হয়ে ওঠে মরুদেশটি। আকাশ বাতাস কেঁপে ওঠে একনায়ক হঠাও, গণতন্ত্র ফেরাও স্লোগানে। শুরু হয়ে যায় গৃহযুদ্ধ। আসাদকে গদিচ্যুত করতে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিদ্রোহীদের যৌথমঞ্চ ‘সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস’ (এসডিএফ)। কুর্দ বাহিনী পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) নেতৃত্বে আরম্ভ হয় এক অসম যুদ্ধ। লড়াইয়ে বিদ্রোহীদের সাহায্য করতে শুরু করে আমেরিকা। আসাদকে সাহায্য করে রাশিয়া।
মার্কিন ও পশ্চিমের দেশগুলোর মদতে সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে জবরদস্ত পালটা মার দিতে শুরু করে বিদ্রোহীরা। এবারে তাদের নেতৃত্ব দেয় তাহরির আল শাম (এইচটিএস)। রাষ্ট্রসংঘ থেকে ইতিমধ্যেই জঙ্গি তকমা দেওয়া হয়েছে আল কায়দার এই শাখা সংগঠনটিকে। বহু লড়াই করেও এইচটিএসের কাছে টিকতে পারেনি আসাদ বাহিনী। গতকাল বুধবার আল আয়দার এই কুখ্যাত জঙ্গি জোলানি ওরফে আহমেদ আল শারাকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। সিএনএন সূত্রে খবর, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সেনাবাহিনীর মুখপাত্র হাসান আবদেল ঘানি জানান, “আমরা দেশের প্রধান হিসাবে কমান্ডার আহমেদ আল শারাকে বেছে নিয়েছি। তিনি সিরিয়ার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।” বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সিরিয়ার রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে, সেইদিকে সবাই তাকিয়ে আছে।